আড়াই মাস ধরে অচল নেসকোর সেবাদানকারী ডেস্কের টেলিফোন, জনমনে ক্ষোভ!

আড়াই মাস ধরে অচল নেসকোর সেবাদানকারী ডেস্কের টেলিফোন, জনমনে ক্ষোভ!

আড়াই মাস ধরে অচল নেসকোর সেবাদানকারী ডেস্কের টেলিফোন, জনমনে ক্ষোভ!
আড়াই মাস ধরে অচল নেসকোর সেবাদানকারী ডেস্কের টেলিফোন, জনমনে ক্ষোভ!

স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় আড়াই মাস যাবত অচল হয়ে পড়ে আছে রাজশাহী নেসকো (নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লি:) অফিসের টেলিসেবার টেলিফোন। বর্তমানে নগরীতে কোথাও কোনো বাসা-বাড়ি কিংবা অফিসের বিদ্যুতের সমস্যায় পড়লে একাধিকবার ফোন করেও কোনো সাড়া মেলে না। গ্রাহকসেবায় দীর্ঘ ভোগান্তির কারণে নগরজুড়ে রাজশাহী নেসকো অফিসের প্রতি জনমনে দেখা মিলেছে তীব্র ক্ষোভ।

রাজশাহীর নেসকো অফিসের টেলিসেবা ডেস্কে কাজ করেন তিন জন। মতিউর রহমান (ইলেকট্রিক-এ), আলমগীর হোসেন (লাইনম্যান-এ) এবং মো. নুরুল ইসলাম (লাইনম্যান-সি)।

সরেজমিনে গিয়ে টেলিসেবা ডেস্কে পাওয়া যায় নুরুল ইসলাম নামের দায়িত্বরত ব্যক্তিকে। তিনি কাজ করছেন ৩৫ বছর যাবত। প্রথমে লাইনম্যান হিসেবে সরকারিভাবে চাকুরি করতেন পিডিবিতে। পরে বিদ্যুতখাত বেসরকারি খাতে চলে যাওয়া সরকারি চাকুরি ছেড়ে নিয়োগ নিয়েছেন নেসকোতে।

দীর্ঘদিন যাবত টেলিফোন অচল হয়ে পড়ে থাকার বিষয়টি জাগো নিউজের প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছেন নেসকোর টেলিসেবার দায়িত্বে থাকা মো. নুরুল ইসলাম (৬৫)।

টেলিসেবার বিড়ম্বনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বর্ষাকালের আগ থেকে নেসকোর এই টেলিফোন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। বৃষ্টির পানি হওয়ার কারণে রাস্তার পাশে টিএন্ডটি লাইনের সমস্যার কারণে এই অবস্থা। কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ টিএন্ডটি কে বলেছে তারপরও তারা পুরোপুরি ঠিকঠাক করে দিচ্ছেন না। মাঝে মধ্যে বিরক্ত হয়ে দু‘একবার আমি নিজে তাদের ডেকে ঠিক করিয়েছিলাম নিজ খরচে। তারপরও আবার আগের মতই অবস্থা।

তিনি আরও জানান, শুধু আমাদের রাজশাহীর সবজিপাড়া অফিস নয়, এমন অবস্থায় পড়ে আছে আছে নেসকোর ডিভিশন-৩ এরও একই হাল। সেখানেও টেলিফোন সংযোগে সমস্যা। কাউ কিছু বলেও লাভ হয় না। কিন্তু জনগণ টেলিসেবা ডেস্কে এসে আমাদের যা ইচ্ছে তাই গালিগালাজ করে যান। পরে তাদের বুঝিয়ে বললে তারা বিষয়টি বুঝতে পারেন। কিন্তু তাতেও অনেকের ক্ষোভ মেটে না।

নগরীর শিরোইল কলোনী এলাকার বাসিন্দা এহসানুল হক ডালিম। টানা তিন দিন যাবত ভুগেছেন বিদ্যুত সংযোগের সমস্যা নিয়ে। তিনি বলেন, টানা তিন দিন যাবত বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগ ছিল না। কর্মব্যস্ততার কারণে বাইরে ছিলাম। পরিবারের নারী সদস্যরা বিদ্যুত অফিসে বারং বার কল করেও ব্যর্থ হয় যোগাযোগে। শেষে বাধ্য হয়ে আমার শ্যালককে বিদ্যুত অফিসে একাধিকবার প্রেরণ করে তিনদিন পর বিদ্যুতের লাইন ঠিক করে দেয় তারা।’

তীব্র ক্ষোভ নিয়ে নগরীর রবের মোড় এলাকার লালু হোসেন বলেন, সময় মতো বিদ্যুতবিল ঠিকই পরিশোধ করা হয়, কিন্তু সময় মতো নেসকোতে বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান চেয়ে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, আমার বাড়িতে দুইদিন যাবত বিদ্যুত ছিল না। ফোন করে না পেয়ে বাধ্য হয়ে অফিসে গিয়ে বিদ্যুতের লাইন ঠিক করে আসতে হয়েছে। তারপরও একবার নয়, একাধিকবার যেতে হয়েছে অফিসে। উপরন্তু লাইন ঠিক করতে আসলে লাইনম্যানদের দিতে হয় চা-পানি খাওয়ার টাকা।

এবিষয়ে নেসকোর ডিভিশন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শরিফুল আওলাদ বলেন, মূলত: বর্ষা মৌসুমে বিদ্যুতের তারে বৃষ্টির পানি পড়ার কারণে তারগুলোতে মরিচা পড়ে যায়। এতে বর্ষা মৌসুমে বিদ্যুতের লাইনগুলোতে বেশী সমস্যা দেখা দেয়। আর এতেই টেলিসেবা ডেস্কে গ্রাহকদের ফোনকল আসে বেশি। টেলিফোনে একাধিক ফোন আসলে তখন স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ত থাকে বা বন্ধ দেখা দেয়। একারণেই অনেকে ভুল বোঝেন।
তবে টেলিফোন সংযোগের সমস্যা ও সমাধানের প্রশ্নে তিনি বলেন, টেলিফোন সংযোগের সমস্যার বিষয়ে সমস্যা হয়েছে এটা সত্য। এবিষয়ে টেলিফোন অফিসে কথা হয়েছে। তবে তারা ঠিক করার পরও পুণরায় এমন সমস্যা মাঝে মধ্যে দেখা দেয়।

তিনি আরও বলেন, খুব দ্রুত এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা চলছে। টেলিসেবা ও ইন্টারনেট ও বিভিন্ন অত্যাধুনিক সেবার আওতায় গ্রাহক সেবা বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত এসব সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে।

এবিষয়ে কথা হয় রাজশাহী উত্তরাঞ্চল টেলিযোগাযোগ কার্যালয়ের (বিটিসিএল) উপপরিচালক মো. গোলাম মোর্শেদের সাথে। তিনি বলেন, নেসকো অফিসের টেলিসেবা ডেস্কের টেলিফোনের সংযোগের সমস্যার বিষয়ে আমার সঠিক জানা নেই। নেসকো অফিস থেকে তাদের সমস্যাটি নিয়ে কার সাথে কথা হয়েছে এবং কিভাবে ব্যবস্থা নিয়েছে এটি আমি জেনে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবো বলেও জানান তিনি।

মতিহার বার্তা / ইএবি

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply